বাংলাদেশের স্বাধিনতা ও বাংলাদেশের ইতিহাস ( Wikipedia)

Posted on : April 24, 2019 | post in : BD News,Others |Leave a reply |

 

বাংলাদেশ  এর সাধিনতা

পোষ্টি পড়ার আগে জেনে রাখুন এই পোষ্টি Wikipedia থেকে সংগ্রহ করা হয়ছে এবং লিনক গুলি Wikipedia এর।

ভাষা আন্দোলন

ভাষা আন্দোলন ছিল পূর্ব বাংলার ইতিহাসে একটি সাংস্কৃতিক অান্দোলন যার উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান  রাষ্ট্রের রাষ্ট্র ভাষা হিসাবে বাংলা ভাষার স্বীকৃতি অাদায়। পাকিস্তানের সরকারী কর্মকাণ্ডে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য এ অান্দোলন পরিচালিত হয়। মুফতি নাদিমুল কামার আহমেদ এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দান করেন।  ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষের বিভাজনের মাধ্যমে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র সংগঠিত হয়; তার দুটি অঞ্চল পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান এর মধ্যে ব্যাপক সাংস্কৃতিক, ভৌগোলিক এবং ভাষাগত পার্থক্য বজায় ছিল। এ পার্থক্য পরবর্তীকালে পূর্ব পাকিস্তান ও পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনৈতিক জীবনে ব্যাপক মাত্রায় প্রভাব বিস্তার করে।
১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান সরকার রাষ্ট্রের একমাত্র জাতীয় ভাষা হিসেবে উর্দুকেঘোষণা করে, এর ফলে পূর্ব পাকিস্তানের বাংলা ভাষাভাষী জনগণের মধ্যে ব্যাপক বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। নতুন আইন প্রনয়ণের সঙ্গে সঙ্গে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা বৃদ্ধি পায় এবং গণ বিরোধিতার সম্মুখীন হয়ে, সরকার সকল ধরণের গণ সমাবেশ ও প্রতিবাদ অান্দোলন বেআইনী ঘোষণা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরছাত্ররা এবং অন্যান্য রাজনৈতিক কর্মীরা এই আইন অমান্য করে এবং ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারী তারিখে একটি বিরাট অান্দোলন সংগঠিত করে।ঐদিনে বহু ছাত্র বিক্ষোভকারীদের পুলিশ হত্যা করে এবং এই আন্দোলন তার চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে।
এই হত্যাকাণ্ডের পরে সারা দেশব্যাপী ব্যাপক বিক্ষোভ ও অান্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। এই অান্দোলনের নেতৃত্বে ছিল আওয়ামী মুসলিম লীগ যার পরবর্তীতে নামকরণ করা হয়আওয়ামী লীগ। কয়েক বৎসর ব্যাপী সংঘর্ষ চলার পর, কেন্দ্রীয় সরকার অবশেষে পরাজয় স্বীকার করে এবং ১৯৫৬ সালে বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর, ইউনেস্কো, ২১ ফেব্রুয়ারিকে অানুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে।[৪৫]বাংলাদেশে ২১ ফেব্রুয়ারী ভাষা আন্দোলন দিবস, একটি জাতীয় দিবস হিসাবে পরিগণিত হয়। শহীদ মিনার স্মৃতিস্তম্ভটি ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে আন্দোলন ও তার শহীদদের স্মরণে নির্মিত হয়।

রাজনীতিঃ ১৯৫৪-১৯৭০সম্পাদনা

পাকিস্তানের দুই অংশের মধ্যে ধীরে ধীরে বিরাট পার্থক্য গড়ে ওঠে। পশ্চিম পাকিস্তানের জনসংখ্যা মোট জনসংখ্যার একটি সংখ্যালঘু অংশ ছিল, কিন্তু রাজস্ব বরাদ্দ, শিল্প উন্নয়ন, কৃষি সংস্কার ও নাগরিক প্রকল্পসমূহের বৃহত্তম অংশের ভাগীদার ছিল তারাই । পাকিস্তানের সামরিক ও বেসামরিক পরিষেবাগুলো মূলতপাঞ্জাবি জাতি দ্বারা অধিকৃত ছিল।পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে শুধুমাত্র একটি রেজিমেন্ট ছিল বাঙ্গালীদের। অনেক বাঙ্গালী পাকিস্তানীদের কাশ্মীর ইস্যুতে স্বভাবজাত উৎসাহ বোধ করেনি , কারণ তারা মনে করত এটি পূর্ব পাকিস্তানকে আরও বেশি ঝুঁকির মুখে ফেলবে এবং এটি শেষ পর্যন্ত তার অস্তিত্বের প্রতি হুমকি হয়ে দেখা দেবে।
১৯৬৮ সালের গোড়ার দিকে শেখ মুজিব ও অন্যান্য ৩৪ জন নেতার বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করা হয়। অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিবর্গ ভারতবর্ষের সহায়তায় পূর্ব পাকিস্তানকে স্বাধীন করার পরিকল্পনা করছিল। যাইহোক এই বিচারের ফলে একটি গণ আন্দোলন সংগঠিত হয় এবং সকল বন্দীদের মুক্ত করার অাহ্বান জানানো হয়। ১৯৬৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি কারাগারে একজন বিদ্রোহী, জহুরুল হককে নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর ফলে অান্দোলন অারও বেগবান হয় এবং পরবর্তীতে ২২ ফেব্রুয়ারি সরকার মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়। গণআন্দোলন পরবর্তীকালে ‘৬৯ এর গণ অভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে।
১৯৬৯ সালের ২৫শে মার্চ আইয়ুব খানজেনারেল ইয়াহিয়া খান কে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। পরবর্তীকালে নতুন রাষ্ট্রপতি দেশের সব ধরণের রাজনৈতিক কর্মকান্ড স্থগিত করে দেন। যাইহোক কিছু সংখ্যক ছাত্র গোপনীয়তার সাথে আন্দোলন বজায় রাখে। সিরাজুল আলম খান এবং কাজী আরেফ আহমেদের নেতৃত্বাধীন ‘১৫ ফেব্রুয়ারি বাহিনী’ নামে একটি নতুন দল গঠন করা হয়। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সালে, ইয়াহিয়া খান ১৯৭০ সালের ৫ই অক্টোবরের জন্য একটি নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেন।[৪৮] পশ্চিমের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্যের বিরুদ্ধে সাফল্যজনক নেতৃত্ব পূর্ব পাকিস্তানে অাওয়ামী লীগকে সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত করে।

স্বাধীনতার প্রস্তুতি

অাওয়ামী লীগ পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের বেশিরভাগ অংশে ১৯৭০-৭১ সালের নির্বাচনেজয়লাভ করে এবং পাকিস্তান সরকার সাংবিধানিক প্রশ্নে অাওয়ামী লীগের সাথে অালোচনা শুরু করে। কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রদেশগুলোর মধ্যে ক্ষমতা বন্টন হয়, সেইসাথে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একটি জাতীয় সরকার গঠন করা হয়। তবে ১৯৭১ সালের ১লা মার্চ পাকিস্তানী রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত করে দেন, যা পূর্ব পাকিস্তানে ব্যাপক বিক্ষোভের সূচনা করে।[৪৯] ১৯৭১ সালের ২রা মার্চ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের এক ছাত্র নেতাঅা স ম আবদুর রবের নির্দেশে বাংলাদেশের নতুন (জাতীয় পতাকা উত্থাপিত হয়।
অান্দোলনকারী ছাত্রনেতারা দাবী করে যে শেখ মুজিবুর রহমান অবিলম্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করুন, কিন্তু মুজিবুর রহমান এই দাবীতে সম্মত হতে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করেন। বরং তিনি ৭ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য একটি জনসভায় তার পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা করবেন বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ৩রা মার্চ ছাত্রনেতা শাহজাহান সিরাজ স্বাধীন বাংলা নিউক্লিয়াসের নির্দেশে পল্টন ময়দানে এক জনসভায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সামনে স্বাধীনতার ইস্তেহার পাঠ করেন।৭ মার্চ তারিখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে একটি জনসাধারণের সমাবেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর চলমান স্বাধীনতা অান্দোলনের অগ্রসরতা সম্পর্কে জন সাধারণকে উদ্বুদ্ধ করেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পরবর্তীতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৭ই মার্চ এর ভাষণে, পাকিস্তানী দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে একটি অাসন্ন যুদ্ধের জন্য পূর্ব পাকিস্তানের জনগণকে প্রস্তুত থাকার জন্য আহ্বান জানান।[৫১]যদিও তিনি সরাসরি স্বাধীনতার কথা উল্লেখ করেননি, কারণ তখনও অালোচনা চলছিল, তিনি তাঁর শ্রোতাদেরকে কোনও এক সর্বাত্মক যুদ্ধের জন্য সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত থাকার জন্য অাহ্বান জানান। শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চাবিকাঠি বলে মনে করা হয়, এবং এ ভাষণের বিখ্যাত উক্তি ছিল:
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম অামাদের মুক্তির সংগ্রাম।

স্বাধীনতার যুদ্ধ

২৬ মার্চের প্রথমার্ধে পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক সামরিক অভিযান শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয় এবং রাজনৈতিক নেতারা বহুবিভক্ত হয়ে যান। পাকিস্তানী সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ার আগে, শেখ মুজিবুর রহমান একটি স্বাক্ষরিত নোট প্রেরণ করেন যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে। এই নোটটি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলস এর বেতার ট্রান্সমিটার দ্বারা প্রচারিত হয়। বাংলাদেশী আর্মি অফিসার মেজর জিয়াউর রহমান কালুরঘাট রেডিও স্টেশন দখল করেন এবং ২৭ মার্চ সন্ধ্যার দিকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করেন।

সামরিক উদ্দেশ্যে বাংলাদেশকে ১১ জন কমান্ডারের অধীনে ১১ টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।এই অাঞ্চলিক বাহিনীগুলোর সাথে সাথে যুদ্ধের জন্য অারও তিনটি বিশেষ বাহিনী গঠন করা হয়ঃ জেড ফোর্সএস ফোর্স এবং কে ফোর্স। এই তিনটি বাহিনীর নাম উক্ত বাহিনীর কমান্ডারদের নামের প্রথম অক্ষর থেকে উদ্ভূত হয়েছে। মেহেরপুর সরকার কর্তৃক প্রশিক্ষণ এবং অস্ত্র ও গোলাবারুদ সহ বেশিরভাগ অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল, যা ভারত কর্তৃক সমর্থিত ছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং বাংলার মুক্তি বাহিনী এর মধ্যে যুদ্ধের সময় আনুমানিক এক কোটি বাঙালী, প্রধানত হিন্দু, ভারতের অাসাম, ত্রিপুরা এবং পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে আশ্রয় নেয়।
পূর্ব পাকিস্তানের প্রতি ভারতের সহানুভূতি ছিল এবং ১৯৭১ সালের ৩রা ডিসেম্বর ভারতবাংলাদেশীদের পক্ষে যুদ্ধ অংশগ্রহণ করে। এর ফলে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দুই সপ্তাহের একটি সংক্ষিপ্ত এবং ব্যাপক বিধ্বংসী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর লেফটেন্যান্ট জেনারেল এ.এ.কে. নিয়াজী এবং পূর্ব পাকিস্তানে অবস্থিত পাকিস্তানি সেনাধ্যক্ষগণ ভারত ও বাংলাদেশের মিত্রবাহিনীর নিকট অাত্মসমর্পণ করে। আত্মসমর্পণকালে শুধুমাত্র কয়েকটি দেশ নতুন রাষ্ট্রকে কূটনৈতিক স্বীকৃতি প্রদান করেছিল।দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৯০ হাজারেরও বেশি পাকিস্তানী সৈন্য আত্মসমর্পন করে।
আজ এই পর্যন্ত
ধন্যবাদ পড়ার জন্যে
Tipscountbd.com এর সাথেই থাকুন
Tags: , , ,

Leave a Reply

 
Theme Designed Bybody{border:6px solid orange; margin:6px;}
Skip to toolbar